মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৩ জনে। নিহতদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশুও রয়েছে। সেনা শাসনের বিরোধীদের আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া এসব মানুষের ওপর গত মঙ্গলবার বিহাম হামলা চালায় সামরিক বাহিনী।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন’র বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের একটি গ্রামে সামরিক জান্তার বিমান হামলায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ১৩৩ জন নিহত হয়েছেন বলে দেশটির ছায়া জাতীয় ঐক্য সরকারের মানবাধিকার মন্ত্রী অং মিও মিনের বরাত দিয়ে জানিয়েছে সিএনএন।
মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চলের কানবালু শহরের পাজিগি গ্রামের বাইরে হওয়া এই হামলাকে দুই বছর আগে অভ্যুত্থানে জান্তা ক্ষমতা দখলের পর থেকে সবচেয়ে মারাত্মক হামলা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সিএনএন’র নিউজে বলা হয়েছে, হামলায় আরও ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কিয়ুনহলা গোষ্ঠী জানিয়েছে। এছাড়া হামলায় আরও অন্তত ২০ শিশুও নিহত হয়েছে। এমনকি হামলার পর চিকিৎসাকর্মীদের হামলাস্থলে পৌঁছাতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মানবাধিকার মন্ত্রী অং মিও মিন।
হামলার শিকার এই সাগাইং অঞ্চলটি মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের প্রায় ১১০ কিলোমিটার (৭০ মাইল) উত্তরে অবস্থিত। কয়েক মাস ধরে লড়াইয়ের পর এই অঞ্চলটি সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।
অবশ্য হামলার পর প্রাথমিক রিপোর্টে মৃতের সংখ্যা প্রায় ৫০ বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু পরে বুধবার দেশটির স্বাধীন মিডিয়ার রিপোর্টে নিহতের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ১০০ জনে উন্নীত হয়েছে বলে জানানো হয়। আর এবার সেই সংখ্যা গিয়ে পৌঁছেছে ১৩৩ জনে।
দুই বছরেরও বেশি সময় আগে সামরিক অভ্যুত্থানে মিয়ানমারে গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকারের পতনের পর থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে অস্থিরতা চলছে। মূলত অং সান সুচির নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করলে মিয়ানমার অশান্তিতে নিমজ্জিত হয়। আর এর ফলেই দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ এবং সশস্ত্র বিদ্রোহের সূচনা হয়।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী তার বিরোধীদের দমন করতে তাদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি বিরোধীদের সশস্ত্র সংগ্রাম মোকাবিলায় ক্রমবর্ধমানভাবে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটির জান্তা সরকার। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে তখন থেকে ৩ হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে অনুমান করা হয়।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন, মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চলের কানবালু শহরের পাজিগি গ্রামের বাইরে দেশটির বিরোধী গোষ্ঠীর একটি স্থানীয় কার্যালয় খোলার জন্য মঙ্গলবার সকাল ৮টায় বহু মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। উপস্থিত সেই মানুষের ভিড়েই সরাসরি বিমান হামলা চালায় সেনাবাহিনী।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে ওই প্রত্যক্ষদর্শী আরও বলেন, হামলার প্রায় আধা ঘণ্টা পরে একটি হেলিকপ্টার সেখানে উপস্থিত হয় এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত জনতার গুলিবর্ষণ করে।
মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো এবং তাদের একটি বড় অংশকে বাস্তুচ্যুত ...
পাঠকের মতামত